Sunday, August 28, 2016

Newsall017 by Ashraful

বাংলাদেশ ৩: ০ ইরান

সেই ইরানকেই গুঁড়িয়ে শুরু

ক্রীড়া প্রতিবেদক | আপডেট: | প্রিন্ট সংস্করণ


এএফসি অনূর্ধ্ব–১৬ ফুটবলে ইরানকে ৩–০ গোলে হারিয়ে বাংলাদেশের মেয়েদের উল্লাস। কাল বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে l প্রথম আলোপ্রতিপক্ষের অর্ধে বল নিয়ে পুরোটা সময় দাপটের সঙ্গে খেলছে বাংলাদেশ! এমন বিরল দৃশ্য আগে হয়তো কল্পনাতেই দেখতেন কোনো খেলাপাগল দর্শক। কিন্তু স্বপ্ন নয়, সত্যিই কাল বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের মেয়েরা দেখিয়েছে, ‘আমরাও পারি!’ মেয়েদের ফুটবলে এশিয়ার অন্যতম শক্তি ইরানকে ৩-০ গোলে হারিয়ে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ ফুটবলের বাছাইটা স্বপ্নের মতোই শুরু করেছে বাংলাদেশ।
সেই বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম। প্রতিপক্ষ সেই ইরান। শুধু স্মৃতির সেলুলয়েডে যদি সন্ধ্যাটা বছর দুয়েক আগে নিয়ে যেত মার্জিয়া-সানজিদারা, তাহলেই মনে পড়ত দুঃস্বপ্নের কথা। এই ইরানের কাছে হেরেই সেবার চূড়ান্ত পর্বে ওঠার স্বপ্নভঙ্গের বেদনায় পুড়তে হয়েছিল বাংলাদেশকে। এক অর্থে সেই হারের বদলাও নেওয়া হলো! যদিও কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন একে প্রতিশোধ বলতে রাজি নন, ‘মেয়েদের খেলার উন্নতি হয়েছে। এখানে কোনো বদলার ব্যাপার নেই, নিজেদের স্বাভাবিক খেলাটাই খেলেছে মেয়েরা।’
কিন্তু সেই স্বাভাবিক খেলাটাই যেন কোথায় হারিয়ে গিয়েছিল ম্যাচের প্রথমার্ধে! মাঝমাঠ থেকে বল নিয়ে দুই প্রান্ত দিয়ে বারবার আক্রমণে উঠেছে সানজিদা-কৃষ্ণা। কিন্তু গোলমুখে গিয়ে খেই হারিয়ে ফেলেছে। গোটা চারেক সহজ সুযোগ প্রথমার্ধেই নষ্ট করেছে স্বপ্না! ম্যাচের স্কোরলাইন ৬-০ হলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকত না!
দ্বিতীয় মিনিটেই ফাঁকা পোস্ট পেয়েও স্বপ্না বাইরে না মারলে শুরু থেকেই গোল-উৎসব শুরু হয়ে যায় বাংলাদেশের! প্রথমার্ধে একাধিকবার মার্জিয়া ও কৃষ্ণা বক্সে ঢুকে এলোপাতাড়ি শট নেয়! প্রতিপক্ষ ইরান—এই নামের ভয়েই কি স্নায়ুচাপে ভুগেছে তারা?
দ্বিতীয়ার্ধে আরও আক্রমণাত্মক খেলেছে বাংলাদেশ। বিরতির সময় কোচের বার্তা ছিল, ‘তোমাদের সব ঠিক আছে। শুধু ফরোয়ার্ড লাইনে সমস্যা, একটা গোল করো, তাহলেই দেখবে আরও গোল আসবে।’ বাংলাদেশ ফসকে যেতে থাকা গোলটা পায় ৬২ মিনিটে। প্রথমে গোলমুখ খোলে মার্জিয়া। বক্সের মধ্যে মারিয়ার শট ইরান গোলরক্ষক মাদেহ দাভাজির হাতে লাগে। ফিরতি শটে মার্জিয়া আলতো টোকায় করে ১-০। গোলমুখ খোলা তো নয়, যেন স্নায়ুচাপের দেয়াল ভেঙে দেওয়া। ৬৫ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে মৌসুমী। সানজিদার ক্রসে দূরপাল্লার জোরালো শটে দর্শনীয় গোলটি করেই সতীর্থদের সঙ্গে উৎসবে মাতল রংপুরের মেয়ে। ৮৬ মিনিটে ব্যবধান বাড়িয়েছে ময়মনসিংহের কলসিন্দুরের মেয়ে তহুরা। মনিকার ক্রসে তহুরা দর্শনীয় হেডে ৩-০ করে।
ম্যাচ শেষের সংবাদ সম্মেলনে ইরানি কোচ সাদি মাহিনীর মুখে শুধুই বাংলাদেশের মেয়েদের প্রশংসা, ‘দুই বছর আগে যে দলকে দেখেছিলাম, তার চেয়ে অনেক উন্নতি হয়েছে বাংলাদেশের। বোঝাই যাচ্ছে, তৃণমূল পর্যায়ে কাজ করেছে ওরা। ওদের এমন জয়ের জন্য অভিনন্দন।’
পুরো ৩ পয়েন্ট পেয়ে শুরু বাংলাদেশের। কোচ গোলাম রব্বানীর মনে চূড়ান্ত পর্বে ওঠার স্বপ্নটা এখন বড়। তবে বাস্তবতার জমিনেই পা রাখছেন তিনি, ‘মাত্র শুরু হলো প্রতিযোগিতা। আমরা ম্যাচ ধরে ধরে চিন্তা করছি। এখনই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন দেখছি না।’
বাংলাদেশের পরের ম্যাচ আগামীকাল। প্রতিপক্ষ সিঙ্গাপুর।
এর আগে দিনের প্রথম ম্যাচে চীনা তাইপে ৭-১ গোলে হারিয়েছে কিরগিজস্তানকে। পরের ম্যাচে সংযুক্ত আরব আমিরাত ২-২ গোলে ড্র করেছে সিঙ্গাপুরের সঙ্গে।

No comments:

Post a Comment

Thanks for your comment